সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আফ্রিকা মহাদেশ দুই ভাগ হয়ে যাচ্ছে? ভূগোলের এক বিস্ময়কর পরিবর্তন!

 🌍 আফ্রিকা মহাদেশ দুই ভাগ হয়ে যাচ্ছে – এক আশ্চর্য ভূতাত্ত্বিক ঘটনা


পৃথিবী প্রতিনিয়ত বদলাচ্ছে। আমরা চোখে না দেখলেও, আমাদের পায়ের তলার এই পৃথিবীর ভূত্বকে ঘটছে বহু অদৃশ্য কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন। এরই একটি চমকপ্রদ প্রাকৃতিক ঘটনা হলো – আফ্রিকা মহাদেশের দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যাওয়া। এটা কোনো কল্পকাহিনি নয়, বরং ভূতত্ত্বের এক বিশুদ্ধ বাস্তবতা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, East African Rift System বা পূর্ব আফ্রিকার রিফট সিস্টেম-এর কারণে ভবিষ্যতে আফ্রিকার মানচিত্র একেবারে বদলে যাবে।

❓❓কি এই রিফট সিস্টেম?

পৃথিবীর ভূত্বক (crust) কয়েকটি বৃহৎ টেকটোনিক প্লেট দিয়ে তৈরি, যা একে অপরের সঙ্গে যুক্ত কিংবা ধাক্কা খাচ্ছে বা দূরে সরে যাচ্ছে। এই প্লেটগুলো যখন একে অপর থেকে ধীরে ধীরে সরে যেতে থাকে, তখন ভূত্বকে ফাটল সৃষ্টি হয়। এই প্রক্রিয়াকে বলে “রিফটিং” (Rifting)। আফ্রিকার পূর্বাঞ্চলে এরকম একটি বিশাল রিফট সিস্টেম সৃষ্টি হয়েছে – যাকে বলা হয় East African Rift Valley।

এই রিফট সিস্টেমটি দুটি টেকটোনিক প্লেটের – আফ্রিকান প্লেট ও সোমালি প্লেট– মধ্যে বিভাজনের ফল। সোমালি প্লেট ধীরে ধীরে আফ্রিকান প্লেট থেকে সরে যাচ্ছে। বছরে গড়ে প্রায় ২.৫ সেন্টিমিটার হারে এটি সরে চলেছে।

🌋 ভূতত্ত্ব ও আগ্নেয়গিরি: রিফট অঞ্চল কেন সক্রিয়?

এই রিফট সিস্টেম শুধু প্লেট বিভাজনের কারণ নয়, বরং এর আশেপাশের এলাকাগুলোতে রয়েছে প্রচুর ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণের সম্ভাবনা। কেনিয়া, ইথিওপিয়া, উগান্ডা, রুয়ান্ডা ও তানজানিয়ার মতো দেশগুলোর কিছু অংশ এই রিফট ভ্যালির মধ্যে পড়েছে। এই অঞ্চলে দেখা যায়:


  • সক্রিয় আগ্নেয়গিরি
  • ভূকম্পনের হার বেশিভূ
  • ভূত্বকে দীর্ঘ ফাটল

এইসব প্রমাণ করে যে আফ্রিকার পূর্বাঞ্চল সত্যিই ধীরে ধীরে আলাদা হয়ে যাচ্ছে।


 ২০১৮ সালে কেনিয়ার বিশাল ফাটল


২০১৮ সালে কেনিয়ার নাইরোবি-নারোক হাইওয়ে বরাবর একটি বিশাল ফাটল হঠাৎ করে দেখা দেয়, যা প্রায় ১৫ মিটার গভীর ও কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ ছিল। যদিও অনেক বিজ্ঞানী বলেছিলেন এটি ছিল বৃষ্টিপাত ও ভূমিক্ষয়ের ফলাফল, তবুও ভূতাত্ত্বিকেরা বলছেন – এই ঘটনা East African Rift System-এর বাস্তব প্রতিফলন।

🌊 নতুন মহাসাগরের জন্ম?


হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়ছেন! বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, যেভাবে এই রিফট সিস্টেম বিস্তৃত হচ্ছে, ভবিষ্যতে (প্রায় ৩ থেকে ৫ কোটি বছর পর) সোমালি প্লেট সম্পূর্ণরূপে আলাদা হয়ে যাবে আফ্রিকান প্লেট থেকে। এর ফলে মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে সমুদ্রের জল প্রবেশ করবে এবং তৈরি হবে একটি নতুন মহাসাগর।

নতুন তৈরি হওয়া এই সমুদ্র পূর্ব আফ্রিকাকে আফ্রিকার বাকি অংশ থেকে আলাদা করে একটি নতুন ভূখণ্ড তৈরি করবে। এভাবে সৃষ্টি হতে পারে একটি নতুন মহাদেশীয় দ্বীপ – অনেকটা মাদাগাস্কার বা গ্রিনল্যান্ড-এর মতো।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

দশম শ্রেণী ভূগোল ম্যাপ পয়েন্টিং মাধ্যমিক Class 10 Geography map pointing

  Click the picture Click the picture   Click the picture Click the picture Click the picture Click the picture Click the picture Click the picture

চাহিদা (Demand) – অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ 100টি MCQ প্রশ্নোত্তর | Economics Notes in Bengali

  চাহিদা (Demand) – 50টি গুরুত্বপূর্ণ MCQ 1 . চাহিদা বলতে কী বোঝায়? a) আকাঙ্ক্ষা b) ক্রয়ক্ষম আকাঙ্ক্ষা c) উৎপাদন d) সরবরাহ ✔ উত্তর: b) ক্রয়ক্ষম আকাঙ্ক্ষা 2. চাহিদার তিনটি উপাদান হলো— a) প্রয়োজন + অর্থ + ইচ্ছা b) প্রয়োজন + উৎপাদন + সরবরাহ c) প্রয়োজন + আয় + শ্রম d) শ্রম + পুঁজি + ভূমি ✔ উত্তর: a) প্রয়োজন + অর্থ + ইচ্ছা 3. চাহিদার আইন কে প্রবর্তন করেন? a) অ্যাডাম স্মিথ b) আলফ্রেড মার্শাল c) কেইনস d) পিগু ✔ উত্তর: b) আলফ্রেড মার্শাল 4. চাহিদার আইনের মূল কথা কী? a) দাম বাড়লে চাহিদা বাড়ে b) দাম বাড়লে চাহিদা কমে c) দাম কমলে চাহিদা কমে d) আয় বাড়লে চাহিদা কমে ✔ উত্তর: b) দাম বাড়লে চাহিদা কমে 5. চাহিদা বক্ররেখা সাধারণত কেমন হয়? a) ঊর্ধ্বমুখী b) নিম্নমুখী c) সমান্তরাল d) উল্লম্ব ✔ উত্তর: b) নিম্নমুখী 6. চাহিদার আইনের কার্যকারিতা কোন শর্তে বজায় থাকে না? a) আয়ের স্তর অপরিবর্তিত থাকলে b) ভোক্তার রুচি অপরিবর্তিত থাকলে c) দাম অপরিবর্তিত থাকলে d) ভোক্তার আয় ক্রমাগত বাড়লে ✔ উত্তর: d) ভোক্তার আয় ক্রমাগত বাড়লে 7. চাহিদা বক্ররেখা আঁকতে X অক্ষের উপর থাকে— a) দাম b) চাহিদার পরিমাণ c)...

প্রশ্নমালা(Questionnaire) কি? প্রশ্নমালার প্রকারভেদ/প্রশ্নমালার সুবিধা ও অসুবিধা

What is questionnaire?/ প্রশ্নমালা কি?  ভূগোলের গবেষণা বা বিষয় অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে তথ্য সংগ্রহ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর তথ্য সংগ্রহের একটি অন্যতম পদ্ধতি হল প্রশ্নমালা পদ্ধতি বা questionnaire method.  এই পদ্ধতির মাধ্যমে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে সুপরিকল্পিত ও সুসজ্জিত কিছু প্রশ্ন লিখিত আকারে উত্তরদাতার কাছে রাখে এবং উত্তরদাতা সেটি পূরণ করে সাক্ষাৎ গ্রহণকারীকে দেয় । Characteristics of questionnaire (প্রশ্নমালার বৈশিষ্ট্য ) :- একটি আদর্শ প্রশ্নমালার কতকগুলি বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করা যেতে পারে ।সেগুলি হল - প্রশ্নের ভাষা সহজ এবং সরল হতে হবে।  প্রশ্নের ভাষা সংক্ষিপ্ত এবং স্পষ্ট হওয়া দরকার।  সব ধরনের মানুষ বুঝতে পারবে এমন প্রশ্ন করা উচিত।  প্রশ্নগুলি যেন উত্তর দাতার পরিবেশের সঙ্গে মানানসই হয় সেদিকে লক্ষ্য দিতে হবে।  উত্তরদাতার আত্মমর্যাদা কে সম্মান দিয়ে প্রশ্নপত্র তৈরি করা উচিত।  দীর্ঘ গননা দরকার এমন প্রশ্ন এড়িয়ে চলা প্রয়োজন।  যেসব প্রশ্নের একাধিক উত্তর বা অসম্পূর্ণ উত্তর হয় সেসব প্রশ্ন এড়িয়ে চলা উচিত।    Step...