সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মুদ্রাস্ফীতি কি সবসময় খারাপ? ইনফ্লেশনের ইতিবাচক দিক জানুন

 মুদ্রাস্ফীতি কি সবসময় খারাপ? ইনফ্লেশনের ইতিবাচক দিক জানুন


আমরা প্রতিনিয়ত পণ্যের দাম বাড়ার কথা শুনি — চাল, ডাল, তেল, বিদ্যুৎ, ইত্যাদি। তখনই একটিই শব্দ মাথায় আসে — “ইনফ্লেশন” বা মুদ্রাস্ফীতি। কিন্তু প্রশ্ন হলো, মুদ্রাস্ফীতি কি সব সময় খারাপ?

অনেকেই জানেন না, মুদ্রাস্ফীতি শুধু মূল্যবৃদ্ধিই নয়, বরং এটি হতে পারে সুস্থ অর্থনীতির লক্ষণও। চলুন আজ জেনে নিই, কবে এবং কীভাবে মুদ্রাস্ফীতি অর্থনীতির পক্ষে ইতিবাচক হতে পারে।

মুদ্রাস্ফীতি (Inflation) কী?


মুদ্রাস্ফীতি বলতে বোঝায় — সময়ের সাথে সাথে পণ্যের গড় দাম বাড়া।

যেমন, ২০২৪ সালে যে চাল আপনি ৩০ টাকায় কিনতেন, ২০২৫ সালে সেটা যদি ৩৫ টাকা হয়, তবে সেটা মুদ্রাস্ফীতি।


কিন্তু সব দাম বাড়া খারাপ নয়। যদি দাম ধীরে ধীরে বাড়ে (যেমন ২%-৬%), তবে সেটা স্বাভাবিক এবং স্বাস্থ্যকর।


✅ ইনফ্লেশনের ইতিবাচক দিকসমূহ


১. অর্থনীতি থাকে সক্রিয়। যখন মানুষ বেশি পণ্য ও সেবা কিনছে, তখনই দাম বাড়ে। অর্থাৎ বাজারে চাহিদা আছে —এটা বোঝায় অর্থনীতি জীবন্ত ও সক্রিয়।


২. বিনিয়োগ ও চাকরি বৃদ্ধি পায়। এই সময় ব্যবসায়ীরা বেশি মুনাফা পায়। ফলে তারা:

নতুন পণ্য তৈরি করে

কর্মী নিয়োগ দেয়

উৎপাদনে বিনিয়োগ করে

এতে চাকরির সুযোগ তৈরি হয়।


৩. ঋণ পরিশোধ সহজ হয়

ইনফ্লেশনের সময় টাকার মান কিছুটা কমে যায়। ফলে ভবিষ্যতে ঋণের অর্থমূল্য কমে যায়।

👉 ঋণগ্রহীতা উপকৃত হয়, ব্যবসাও বাড়ে।

⚠️ ইনফ্লেশন কবে ক্ষতিকর?


যদি মূল্যবৃদ্ধি অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যায় (১০%-২০%), তখন তা সাধারণ মানুষের সঞ্চয় ও জীবনযাত্রার উপর বড় প্রভাব ফেলে।

এমনকি “হাইপারইনফ্লেশন”-এ পণ্যের দাম দিনে দিনে বেড়ে যায় — যা সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।


একইভাবে, ইনফ্লেশন না থাকলেও সমস্যা — অর্থনীতির চাহিদা কমে যায়, উৎপাদন কমে, বেকারত্ব বাড়ে।

🎯 “সুষম মুদ্রাস্ফীতি”–ই হচ্ছে সুস্থ অর্থনীতি


বিশ্বের প্রায় সব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক (যেমন RBI) একটি নির্দিষ্ট ইনফ্লেশন রেট ধরে চলে —

👉 সাধারণত ৪%-এর আশেপাশে। এটাকে বলা হয় “Target Inflation”। এই সীমার মধ্যে ইনফ্লেশন থাকলে অর্থনীতি ভালোভাবে চলে।


উপসংহার

ইনফ্লেশন মানেই সর্বনাশ — তা নয়। 

👉 মুদ্রাস্ফীতি সঠিক মাত্রায় থাকলে তা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান ও চাহিদা বৃদ্ধির চিহ্ন।


🔗 যদি আপনি এই ব্লগটি পড়ে উপকৃত হন, তাহলে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আর আরও এমন সহজ ভাষায় অর্থনৈতিক লেখা পেতে নিয়মিত ভিজিট করুন 👉 moumitageoweb.blogspot.com




মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

দশম শ্রেণী ভূগোল ম্যাপ পয়েন্টিং মাধ্যমিক Class 10 Geography map pointing

  Click the picture Click the picture   Click the picture Click the picture Click the picture Click the picture Click the picture Click the picture

চাহিদা (Demand) – অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ 100টি MCQ প্রশ্নোত্তর | Economics Notes in Bengali

  চাহিদা (Demand) – 50টি গুরুত্বপূর্ণ MCQ 1 . চাহিদা বলতে কী বোঝায়? a) আকাঙ্ক্ষা b) ক্রয়ক্ষম আকাঙ্ক্ষা c) উৎপাদন d) সরবরাহ ✔ উত্তর: b) ক্রয়ক্ষম আকাঙ্ক্ষা 2. চাহিদার তিনটি উপাদান হলো— a) প্রয়োজন + অর্থ + ইচ্ছা b) প্রয়োজন + উৎপাদন + সরবরাহ c) প্রয়োজন + আয় + শ্রম d) শ্রম + পুঁজি + ভূমি ✔ উত্তর: a) প্রয়োজন + অর্থ + ইচ্ছা 3. চাহিদার আইন কে প্রবর্তন করেন? a) অ্যাডাম স্মিথ b) আলফ্রেড মার্শাল c) কেইনস d) পিগু ✔ উত্তর: b) আলফ্রেড মার্শাল 4. চাহিদার আইনের মূল কথা কী? a) দাম বাড়লে চাহিদা বাড়ে b) দাম বাড়লে চাহিদা কমে c) দাম কমলে চাহিদা কমে d) আয় বাড়লে চাহিদা কমে ✔ উত্তর: b) দাম বাড়লে চাহিদা কমে 5. চাহিদা বক্ররেখা সাধারণত কেমন হয়? a) ঊর্ধ্বমুখী b) নিম্নমুখী c) সমান্তরাল d) উল্লম্ব ✔ উত্তর: b) নিম্নমুখী 6. চাহিদার আইনের কার্যকারিতা কোন শর্তে বজায় থাকে না? a) আয়ের স্তর অপরিবর্তিত থাকলে b) ভোক্তার রুচি অপরিবর্তিত থাকলে c) দাম অপরিবর্তিত থাকলে d) ভোক্তার আয় ক্রমাগত বাড়লে ✔ উত্তর: d) ভোক্তার আয় ক্রমাগত বাড়লে 7. চাহিদা বক্ররেখা আঁকতে X অক্ষের উপর থাকে— a) দাম b) চাহিদার পরিমাণ c)...

প্রশ্নমালা(Questionnaire) কি? প্রশ্নমালার প্রকারভেদ/প্রশ্নমালার সুবিধা ও অসুবিধা

What is questionnaire?/ প্রশ্নমালা কি?  ভূগোলের গবেষণা বা বিষয় অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে তথ্য সংগ্রহ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর তথ্য সংগ্রহের একটি অন্যতম পদ্ধতি হল প্রশ্নমালা পদ্ধতি বা questionnaire method.  এই পদ্ধতির মাধ্যমে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে সুপরিকল্পিত ও সুসজ্জিত কিছু প্রশ্ন লিখিত আকারে উত্তরদাতার কাছে রাখে এবং উত্তরদাতা সেটি পূরণ করে সাক্ষাৎ গ্রহণকারীকে দেয় । Characteristics of questionnaire (প্রশ্নমালার বৈশিষ্ট্য ) :- একটি আদর্শ প্রশ্নমালার কতকগুলি বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করা যেতে পারে ।সেগুলি হল - প্রশ্নের ভাষা সহজ এবং সরল হতে হবে।  প্রশ্নের ভাষা সংক্ষিপ্ত এবং স্পষ্ট হওয়া দরকার।  সব ধরনের মানুষ বুঝতে পারবে এমন প্রশ্ন করা উচিত।  প্রশ্নগুলি যেন উত্তর দাতার পরিবেশের সঙ্গে মানানসই হয় সেদিকে লক্ষ্য দিতে হবে।  উত্তরদাতার আত্মমর্যাদা কে সম্মান দিয়ে প্রশ্নপত্র তৈরি করা উচিত।  দীর্ঘ গননা দরকার এমন প্রশ্ন এড়িয়ে চলা প্রয়োজন।  যেসব প্রশ্নের একাধিক উত্তর বা অসম্পূর্ণ উত্তর হয় সেসব প্রশ্ন এড়িয়ে চলা উচিত।    Step...